১.
গ্রামের স্কুলের পাশের মাঠে আলিফ গোল্লাছুট খেলছে। বয়স খুব বেশি না, আগামী মাসে ছয় পেরিয়ে সাতে পা দেবে। অনেকক্ষণ ধরে খেলছে তার বন্ধুদের সাথে।

সন্ধ্যা হয়ে এসেছে তাই তার দাদা তাকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে এখন। বাড়িতে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বসলো। প্রায় আড়াই ঘন্টা পরে তার মা তাকে খেতে ডাক দিলো। পরিবারের সবার সাথে খাওয়া শেষ করে দাদা-দাদীর সাথে ঘুমাতে গেলো আলিফ।

ভোরের দিকে আলিফের কান্নার আওয়াজ, প্রচন্ড ব্যথায় কাঁদছে সে। কান্নার আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে গেলো তার দাদা-দাদীর। উঠেই দেখতে পেলো আলিফ তলপেটের নিচে হাত দিয়ে কান্না করছে।

কান্নার কারণ জানতে দাদা আলিফের প্যান্ট খুলতেই দেখতে পেলো আলিফের লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া নেই, অথচ আলিফের এখনো খৎনা করানো হয়নি। রাতারাতি খৎনা কিভাবে হয়ে গেলো তাও কোনো রক্তপাত ছাড়া।
বাড়িতে ততক্ষণে সবাই জেগে গেছে। আলিফ ব্যথায় কাতরাচ্ছে। বাড়ির চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে পাশের বাড়ির ষাটোর্ধ্ব মহিলা দেখতে এলো কি হয়েছে সেখানে।
ঘটনা শুনে আর আলিফের অবস্থা দেখে বৃদ্ধা তৎক্ষণাৎ বলে দিলো, “আরে এইডা ‘পয়গম্বরী খৎনা‘, তোমাগো বাড়ির পোলাডা কত ভাইগ্যবান। আল্লা-র কুদরতে হ্যার খৎনা হ‌ইয়া গেসে গা। এলাকার হক্কলরে মিষ্টি-মুষ্টি খাওয়াইয়ো। যাই, খবরটা দিয়া আই হক্কলরে।”

আলিফের এই অলৌকিক খৎনার খবর চারদিকে ছড়িয়ে গেলো। সবাই আলিফকে দেখতে আসছে। পরিবারের লোকজন‌ও খুব খুশি তাদের ছেলের এই খৎনা নিয়ে।
আলিফ প্রচন্ড ব্যথায় ক্লান্ত হয়ে ঘুমাচ্ছে এখন। কি হয়েছে আলিফের? সত্যিই কি কোনো অলৌকিক সত্ত্বার দ্বারা আলিফের খৎনা হয়েছে? নাকি অন্য কিছু?

২.
গ্রাম থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে এই গ্রামের‌ই ছেলে সাঁজু, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। এখন সে ক্লাসে, প্রফেসরের লেকচার মনোযোগ দিয়ে শুনছে।
ক্লাসে কয়েকদিন ধরে Penis of Anatomy বা লিঙ্গের ব্যবচ্ছেদ নিয়ে পড়ানো হচ্ছে। আজকে Development Anomalies নিয়ে পড়ানোর সময় সে ফাইমোসিস (Phimosis) ও প্যারাফাইমোসিস (Paraphimosis) সম্পর্কে জানতে পারে। প্রফেসর থেকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে আরো বেশ কিছু তথ্য নোট করে নেয় সাঁজু।

ক্লাস শেষ, লেকচারের সামারি‌ও নোট করা শেষ সাঁজুর। সাঁজুর নোটবুকটা দেখে আসি, চলুন। অনেকক্ষেত্রেই প্যারাফাইমোসিস আর ফাইমোসিস গুলিয়ে ফেলা হয় তাই শুরুতেই দুটোকে আলাদা ভাবে লিখেছে।পড়ে যা বুঝলাম তার সারাংশ বলছি।

এক কথায় অনেকের লিঙ্গের শিশ্নাগ্র ত্বক বা লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়ার (Foreskin/Prepuce) ছিদ্র অনেক ছোট থাকে এতে অগ্রভাগের চামড়াকে লিঙ্গের গোড়ার দিকে টানা সম্ভব হয় না, যার ফলে শিশ্নমুণ্ড (Glans penis) সম্পূর্ণ বের হতে পারে না, লিঙ্গ বা শিশ্নের এই অবস্থাকে ফাইমোসিস বলে।
অথবা আরেকটু সহজ করে বললে, খৎনা না করালে যেকোনো স্বাভাবিক পুরুষের পেনিসের অগ্রভাগ যে চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে ওটাকেও ফাইমোসিস বলা যায়।

যেকোনো পুরুষের ক্ষেত্রে উপসর্গ প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত ফাইমোসিস কোনো জটিল সমস্যা নয়। সাধারণত দশ বছরের কম বয়সী শিশু যাদের সারকামসিশন (Circumcision) অর্থাৎ লিঙ্গাগ্রচর্মছেদন বা খৎনা করানো হয়নি তাদের মধ্যে ফাইমোসিসের উপসর্গ বেশি দেখা যায়, শিশুরা ছাড়াও যে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের খৎনা করানো হয়নি তাদের মধ্যেও ফাইমোসিস এর উপসর্গ দেখা যায়। অনেকের প্রস্রাব করার সময় সমস্যা হয়, ঠিক মতো পরিষ্কার করতে না পারলে মূত্র জমে থেকে মূত্রনালিতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

ফাইমোসিসের প্রভাবে সাধারণত মূত্র ত্যাগে অথবা যৌন উত্তেজনায় লিঙ্গ উত্থানের ফলেও ব্যথা অনুভূত হয়।
সাধারণত শিশুদের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ফাইমোসিসের প্রভাব কমে যায়। তবে যদি না কমে অথবা এর প্রভাব বৃদ্ধি পায় তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে স্টেরয়েড ক্রীম ব্যবহার করে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া বা ফোরস্কিনের সংকোচন প্রসারণ স্বাভাবিক করা সম্ভব। এছাড়াও ফাইমোসিস প্রভাব থেকে মুক্তির শেষ উপায় হচ্ছে সারকামসিশন বা খৎনা।

১৮৬৫ থেকে ১৮৭২ সালে মধ্য এশিয়ার কোনো এক স্থানে একটি ছোট ছেলের খৎনা করানোর দৃশ্য।সোর্স: Library of Congress

১৮৬৫ থেকে ১৮৭২ সালের মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে মধ্য এশিয়ার কোনো এক স্থানে একটি ছোট ছেলের খৎনা করানোর দৃশ্য।
সোর্স: Library of Congress

আশা করি ফাইমোসিস নিয়ে মোটামুটি ধারণা দিতে পেরেছি। এবার প্যারাফাইমোসিস নিয়ে বলা যাক। নাম শুনে কিছু না মনে হলেও এটা সত্যিই লিঙ্গের প্যারাদায়ক এক অবস্থা। চলুন একটা উদাহরণের মাধ্যমে প্যারাফাইমোসিস কি তা জানার চেষ্টা করি।

রাতের বেলায় রাহুল মূত্র ত্যাগ করতে গেলো, বয়স পনেরো। তার লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া খুব বেশি সংকোচিত করে লিঙ্গের গোড়ার দিকে টানা যায় না, ফাইমোসিস আছে বলা যায়। মূত্র ত্যাগ করতে-করতে কৌতূহল বশত তার ইচ্ছে হলো অগ্রভাগের চামড়া সরিয়ে সম্পূর্ণ শিশ্নমুণ্ড দেখার। সে লিঙ্গের চামড়া গোড়ার দিকে টানতে শুরু করলো। অনেকক্ষণ চেষ্টার পরে তার শিশ্নমুণ্ডের উপরের চামড়া সরাতে সক্ষম হলো, শিশ্নমুণ্ড উন্মুক্ত এখন।

কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো তখন‌ই, তার চামড়া গিয়ে শিশ্নমুণ্ডের নিচের খাঁজ বা Neck of Penis এ আটকে গেছে। কোনোভাবেই সেটাকে টেনে লিঙ্গের অগ্রভাগে নেয়া যাচ্ছে না, রাহুল ব্যথা পাচ্ছে। ঘুমিয়ে গেলে ঠিক হয়ে যাবে এই ভেবে বাড়িতে কিছু না জানিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়লো। দুদিন কেটে গেলো কিন্তু এখনো চামড়া আগের অবস্থায় ফিরে আসছে না।
শিশ্নমুণ্ডের নিচের খাঁজে চামড়া আটকে যাওয়ায় রাহুলের লিঙ্গের অগ্রভাগে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে শিশ্নমুণ্ড লাল বর্ণ ধারণ করেছে (যদিও অনেকের শিশ্নমুণ্ড নীল বর্ণ‌ও হতে পারে এক্ষেত্রে)। সেইসাথে পেনিস নেকে ফোরস্কিন বা অগ্রচর্ম আটকে থাকার ফলে পুঁজ আর পানিতে ফুলে গিয়ে শিশ্নমুণ্ডকে ঘিরে রেখেছে। রাহুলের লিঙ্গের এই প্যারাদায়ক অবস্থা‌-ই মূলত প্যারাফাইমোসিস।

এই ছিলো মূলত ফাইমোসিস আর প্যারাফাইমোসিস নিয়ে সাঁজুর নোটের সামারি।

৩.
পাঁচ দিন পর, আলিফের ব্যথা দিন দিন আরো বাড়ছে। তার শিশ্নমুণ্ডের খাঁজের চামড়া ফুলে শিশ্নমুণ্ডকে ঘিরে রেখেছে। শিশ্নমুণ্ড ঈষৎ নীল বর্ণ ধারণ করেছে।

চলাফেরা ঠিকমতো করতে পারছে না। পরিবারের সদস্যরা এখন অনেকটাই চিন্তিত। কি করবে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছে না তারা।

এদিকে সাঁজু তার কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আনতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে। এখন গাড়িতে আছে সে। বাড়ি পৌঁছেই শুনতে পেলো আলিফের কথা। পয়গম্বরী খৎনা শুনে তার কিছুটা সন্দেহ হলো। তাই সে আলিফকে দেখতে তার বাড়িতে গেলো।
আলিফের লিঙ্গের অবস্থা দেখেই সাঁজিকুল সাঁজু বুঝতে পারলো এ কোনো পয়গম্বরী খৎনা নয়, এটা প্যারাফাইমোসিস।
আলিফের পরিবারের লোকজনকে তৎক্ষণাৎ বিষয়টি জানালো সাঁজিকুল এবং আলিফের ক্লিনিকাল ট্রিটমেন্টের প্রয়োজনীতা সম্পর্কেও বললো।

আলিফকে এখন সাঁজিকুলের মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, প্যারাফাইমোসিস রিমুভ করা হবে তার। আলিফের লিঙ্গে বরফ দেয়া হচ্ছে যাতে ব্যথা কম হয়।

এখন আলিফ অপারেশন থিয়েটারের বেডে শুয়ে আছে, সাথে আছে সাঁজু। সাঁজুর জেনারেল সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রোজারিও ট্রিটমেন্ট করবে। প্রফেসর অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করলেন। আলিফের লিঙ্গ পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন এবং সারকামসিশন বা খৎনা করার সিদ্ধান্ত নিলেন।

প্রফেসর প্রথমেই লিঙ্গের গোড়ার দিকে ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করলো, আলিফের এখন কোনো ধরণের ব্যথা অনুভূত হচ্ছে না।

এরপর পেনিস নেকে পুঁজ আর তরলের কারণে ফুলে থাকা ফোরস্কিনে কয়েকটি ছিদ্র করলো। এরপর হাত দিয়ে সেই ফোরস্কিনে মৃদুভাবে চাপ দিচ্ছে যাতে তরল পদার্থ সেই ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে।

কয়েক মিনিটের মধ্যে ফুলে থাকা ফোরস্কিনের সব তরল পদার্থ বের করে দিলো। এবার ফোরস্কিনকে আলতো করে ধরে লিঙ্গের অগ্রভাগে আনার চেষ্টা করছে। ধীরে ধীরে পুরো ফোরস্কিন লিঙ্গের অগ্রভাগে এনে ফেলছেন, শিশ্নমুণ্ড ফোরস্কিনের ভিতরে এখন।

সারকামসিশন করার জন্য ফোরস্কিনকে টেনে আরো কিছুটা প্রসারিত করলো। এরপর ক্যাটগাট (Catgut) অর্থ্যাৎ সার্জিক্যাল সুতো দিয়ে প্রসারিত ফোরস্কিনকে বেশ শক্ত করে বেঁধে ফেললো।

এখন সারকামসিশন স্ট্যাপলারের (Circumcision Stapler) মধ্যে লিঙ্গের শিশ্নমুণ্ড পর্যন্ত প্রবেশ করানো হয়েছে। প্রফেসর রোজারিও স্ট্যাপলারের ট্রিগারের প্রেশার দিচ্ছেন এবং একটু একটু করে স্ট্যাপলারটিকে পুরো শিশ্নমুণ্ডের চারিদিকে ঘুরাচ্ছেন যার ফলে একসাথে ফোরস্কিন কাটার সাথে সাথে সেলাইও হয়ে যাচ্ছে।

সারকামসিশন কমপ্লিট। অধ্যাপক সাহেব পেনিসে ব্যান্ডেজ করছেন। প্রফেসর রোজারিও আলিফকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছে এখন, তাই আলিফ এখন ঘুমাচ্ছে।

৪.
এবার কি কি কারণে পেনিসে প্যারাফাইমোসিস অবস্থা সৃষ্টি হয় তা জানা যাক।

যাদের সারকামসিশন বা খৎনা করানো হয়নি তাদের মধ্যেই প্যারাফাইমোসিস দেখা যায়। তবে এর মানে এই নয় যে যাদের সারকামসিশন করানো হয়নি তাদের সবার‌ই প্যারাফাইমোসিস হয়।

প্যারাফাইমোসিসের কয়েকটি কারণ বলা যাক:

  1. কেউ যদি নিজের লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া বা ফোরস্কিনকে লিঙ্গের গোড়ার দিকে অতিরিক্ত টেনে নিয়ে আসে এবং ফোরস্কিন যদি পেনিস নেকে আটকে যায় তাহলে প্যারাফাইমোসিস সৃষ্টি হতে পারে। অনেকক্ষেত্রে সেক্স করার সময়‌ও ফোরস্কিন শিশ্নমুণ্ড থেকে সরে গিয়ে পেনিস নেকে আটকে যেতে পারে।
  2. লিঙ্গ বা পেনিসের ভিতরে অংশ নিয়মিত পরিষ্কার করা না হলে সেখানে ইনফেকশন হয়ে ফোরস্কিন ফুলে গিয়ে প্যারাফাইমোসিস হতে পারে। এছাড়াও বাহ্যিক কোনো কারণে লিঙ্গে আঘাত পেলে অথবা লিঙ্গে কীটপতঙ্গের কামড়ের ফলে ফোরস্কিন ফুলে গিয়ে প্যারাফাইমোসিস সৃষ্টি করতে পারে।
  3. অনেকক্ষেত্রে ডায়বেটিসের ফলে পেনিস ও ফোরস্কিনে দীর্ঘস্থায়ী কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয় যার মধ্যে প্যারাফাইমোসিস অন্তুর্ভুক্ত।
  4. সারকামসিশন বা খৎনা নিয়ম অনুযায়ী করা না হলেও ফাইমোসিস হতে পারে। সাধারণত গ্রামাঞ্চলে গণি দিয়ে খৎনা করানো হয়। যারা সারকামসিশন করানোর সময় ফোরস্কিন কেটে ফেলে দিয়ে ত্বকে কোনো ধরণের সেলাই করা ছাড়াই পোড়া কাপড়কে ব্যান্ডেজ হিসেবে ব্যবহার করে। অনেক শক্ত করে পোড়া কাপড় পেনিসের মধ্যে পেঁচিয়ে রাখার ফলে পেনিস নেকে পুঁজ ও তরলের থলি সৃষ্টি করে। এই অবস্থাকে পোস্ট সারকামসিশন প্যারাফাইমোসিস বলা যায়। অর্থ্যাৎ সারকামসিশন করানোর পরেও সঠিক চিকিৎসার অভাবে প্যারাফাইমোসিস হতে পারে।

উপরোক্ত এই কারণগুলোর কোনো একটার ফলেই একজন ব্যক্তির প্যারাফাইমোসিস হতে পারে।

উল্লেখ্য প্যারাফাইমোসিসের লক্ষণ দ্বিতীয় প্যারাতেই বলেছি তাই এখন আর রিপিট করছি না।

এবার যাদের সারকামসিশন করানো হয়নি তারা প্যারাফাইমোসিস কিভাবে প্রতিরোধ করবেন তার কিছু উপায় বলা যাক।

মূত্র ত্যাগের পর পেনিস ভালোভাবে ধৌত করতে হবে, যাতে মূত্র জমে না থাকে। অন্যথায় ইনফেকশন হতে পারে।
যৌন মিলনের সময় পেনিসের ফোরস্কিন যাতে গ্ল্যান্স পেনিস বা শিশ্নমুণ্ডের নিচে নামা না সেদিকে খেয়াল রাখা।

দীর্ঘ সময় ধরে ফোরস্কিনকে লিঙ্গের গোড়ার দিকে নিয়ে রাখা যাবে না। অনেক সময় পেনিসের বিভিন্ন ক্লিনিকাল টেস্টের জন্য ফোরস্কিন লিঙ্গের গোড়ার দিকে নেয়া হয়, তো সেইক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে টেস্টে করা শেষ হলে ফোরস্কিনকে যেনো আবার স্বাভাবিক অবস্থায় আনা হয়।
এবার প্রাসঙ্গিক টপিক নিয়ে বলা যাক। আলিফকে যদি আরো ক্লিনিকাল ট্রিটমেন্ট না করা হতো তাহলে কি ঘটতো? প্যারাফাইমোসিস কি আপনা আপনি কমে যেতো?
উত্তর হলো না। প্যারাফিমোসিসে ফোরস্কিনের চাপে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে নেক্রোসিস (Necrosis) হয়ে যেতে পারে, খাঁটি বাংলায় লিঙ্গে পচন ধরতে পারে। এটা নির্ভর করে ব্যক্তির ফোরস্কিন কতটা শক্ত/টাইট তার উপর। আলিফ শিশু হ‌ওয়ায় তার ফোরস্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের মতো হয়নি সেই জন্য নেক্রোসিস হ‌ওয়ার সম্ভাবনা কম ছিলো।

তবে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের প্যারাফাইমেসিস হলে এবং দ্রুত ক্লিনিকাল ট্রিটমেন্ট না করালে লিঙ্গে পচন ধরে যেতে পারে। তখন সারকামসিশন করেও লাভ হবে না। পেনিস নির্দিষ্ট অংশ কেটে ফেলতে হবে যাতে তা সম্পূর্ণ পেনিসে না ছড়ায়।

৫.
এবার জানা যাক আলিফের ঠিক কি কারণে এই প্যারাফাইমোসিস হয়েছিলো। চলুন টাইম মেশিনে করে একটু অতীতে গিয়ে সে রাতে ঠিক কি ঘটেছিল তা পর্যবেক্ষণ করি।
নিঝুম রাত, বাইরে ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। আলিফের বাড়ির সবাই ঘুমাচ্ছে, আলিফের দুইপাশে তার দাদা-দাদীও ঘুমাচ্ছে। আলিফের ঘুম আসছে, ছটফট করছে।
মাঝে মধ্যে আলিফ তার লিঙ্গ বা পেনিসের অগ্রচর্ম বা ফোরস্কিনকে গোড়ার দিকে নেয়ার চেষ্টা করছে। ফোরস্কিন টেনে শিশ্নমুণ্ডের মাঝামাঝি পর্যন্ত নিতে পেরেছে, এর বেশি নেয়ার চেষ্টা করতেই ব্যথা পাচ্ছে। এরকম কয়েকবার চেষ্টা করতে করতে সে ঘুমিয়ে পড়লো।

ঘুমানোর পরেও সে এপাশ ওপাশ করছে, বেশ ছটফট করছে ঘুমের মধ্যেই। আলিফ ঘুমানোর আগে তার ফোরস্কিন লিঙ্গের অগ্রভাগে আনতে ভুলে যায়, তার ফোরস্কিন শিশ্নমুণ্ডের মাঝামাঝি জায়গায় আছে এখন।

ঘুমের মধ্যে বেশি ছটফট করার ফলে প্যান্টের সাথে লিঙ্গের ফোরস্কিনের বেশ ভালো মতোই ঘর্ষণ হয় এতে তার ফোরস্কিন শিশ্নমুণ্ড পেরিয়ে পেনিসের নেকে আটকে যায়।
সাধারণত খৎনা করা অবস্থায় যেমন ফোরস্কিন থাকে না এবং শিশ্নমুণ্ড উন্মুক্ত থাকে তেমনি এইক্ষেত্রেও ফোরস্কিন পেনিস নেকে আটকে থাকায় শিশ্নমুণ্ড উন্মুক্ত হয়ে যায়।

যার ফলে সেই ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা ও পরিবারের সবাই ভাবে কোনো অলৌকিক সত্ত্বা রাতারাতি খৎনা করিয়েছে। যাকে পয়গম্ভরী খৎনা নামে ডাকা হচ্ছে।

তাই কোনো ঘটনাকে অলৌকিকতার পোশাক পরানোর আগে ঘটনাকে ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করুন, চিন্তা করুন, ভাবুন।

বাঁচতে হলে ভাবতে হবে

তথ্যসুত্র: