Death : An inside story

 

Chapter 10 : Ghosts Debunked

১. সদ্গুরু তার বইয়ের এই অধ্যায়ের প্রথম অংশে বলেছেন , প্রতিটি জীব সময়, শক্তি ও স্মৃতি‌ এই তিনটির সমন্বয়ে গঠিত। সময়ের উপর কারো নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে বাকি দুটি যথা- শক্তি ও স্মৃতি কতটুকু ব্যায়িত বা সঞ্চিত হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে ব্যক্তি কতদিন বেঁচে থাকবে।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : না, জীব সময়, শক্তি ও স্মৃতির সাহায্যে গঠিত না। অনেক জীব আছে যাদের স্মৃতি বলতে কিছু নেই। আবার সময় একটা মাত্রা এর সাথে জীবের দেহের গঠনের সম্পর্ক কী? কোন ব্যক্তি কতদিন বেঁচে থাকবে তা তৃতীয় শক্তির উপর নির্ভরশীল নয়। বলতে পারেন তিনি হয়তো বুঝিয়েছেন, দৈহিক শক্তি ও আমাদের ব্রেইনের কথা। কিন্তু তিনি মোটেও এরকম কিছু বোঝাতে চান নি। ব্রেইন যদি বুঝিয়েও থাকেন, তবে সেটা আমাদের শরীরেরই অংশ।

প্রাণ হচ্ছে একসেট রাসায়নিক বিক্রিয়া, কোষের বিভিন্ন রকমের রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়, অনেকগুলো প্রশ্ন মিলে টিস্যু, কয়েক ধরনের টিস্যু মিলে একটা অঙ্গ, কয়েকটি অঙ্গ মিলে একটি তন্ত্র এবং অনেকগুলো তন্ত্র মিলে একটা জীব দেহ।

প্রাণ কী এই নিয়ে বিসিবিতে নাঈম্ভাই এর লেখাটা পড়তে পারেন,বিজ্ঞানে অজ্ঞান বইতে বিস্তারিত আলোচনা আছে এই সম্পর্কে :

[https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/3677891558961153/?mibextid=Nif5oz](https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/3677891558961153/?mibextid=Nif5oz)

২. কারো যদি স্মৃতি ফুরিয়ে যায় কিন্তু শক্তি অবশিষ্ট থাকে তবে সে অকালে মৃত্যুবরণ করবে অথবা নিস্তেজ জীবনযাপন করবে।

তবে যদি কোনো ব্যক্তির শক্তি ফুরিয়ে যায় কিন্তু মেমোরি অবশিষ্ট থাকে তাহলে সেই ব্যক্তি মরার পরে ভূত হয়ে যাবে!

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক কথা। মৃত্যু মোটেও এরকম কোন জিনিস না। স্মৃতি ফুরিয়ে যাওয়া বলতে যদি ব্রেইনের কাজ করা বন্ধ করে দেওয়া বুঝিয়ে থাকেন, তবুও তিনি ভুল। কেননা ব্রেইন ডেথ মানে প্রাণীটি পুরোপুরি মৃত হয়ে গেছে, তাকে ফিরিয়ে আনা যাবে না।

ব্রেইন কাজ করা বন্ধ করে দিলে শক্তি থাকুক বা না থাকুক আপনি মৃতই।

শক্তি ফুরিয়ে গিয়ে মেমোরি বা স্মৃতি কীভাবে থাকে? এটা বৈজ্ঞানিকভাবে আদৌ সম্ভব নয়। বাকি রইল ভূত হওয়া, জিন, ভুত, আত্মা, প্রেতাত্মা সবই বৈজ্ঞানিকভাবে অপ্রমানিত। এসবের কোনো অস্তিত্ব নেই।

মৃত্যু কী ও কেন তা নিয়ে পড়েন :

[https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/2475853299164991/?mibextid=Nif5oz](https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/2475853299164991/?mibextid=Nif5oz)

প্রাসঙ্গিকভাবে পড়তে পারেন পূ্র্নজন্ম বা জন্মান্তর কেন সম্ভব নয় [https://www.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/5821989671217987/?app=fbl](https://www.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/5821989671217987/?app=fbl)

আত্মা নিয়ে পড়েন:

[https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/2635608233189496/?mibextid=Nif5oz](https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/2635608233189496/?mibextid=Nif5oz)

[https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/2401431539940501/?mibextid=Nif5oz](https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/2401431539940501/?mibextid=Nif5oz)

৩. সদ্গুরুর মতে, মানুষের দেহ দুই ধরনের হয় ; দৃশ্যমান শারীরিক দেহ এবং মেমোরি বা স্মৃতি দেহ। শক্তি ফুরিয়ে গেলে শারীরিক দেহ অচল হয়ে পড়ে কিন্তু স্মৃতি দেহ তখনো যথেষ্ট শক্তিশালী থাকে। এই স্মৃতি দেহকেই মানুষ ভূত হিসেবে দেখতে পায় বা অনুভব করে!

অর্থাৎ উনার দৃষ্টিতে আমরাও ভূত ! আমাদের দেহ আছে কিন্তু সত্যিকার ভূতেদের দেহ নেই; এই হলো পার্থক্য!

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : এসব বানোয়াট কথা। মানুষ ও অন্যান্য জীবের দেহ একটাই। ব্রেইন যতক্ষণ সচল থাকে ততক্ষণ আমাদের চেতনা থাকে, ব্রেইন ডেথ হলে আমাদের চেতনা শূন্য হয়ে যায়। দেহ কোষ থেকে শুরু করে নিউরন কোষ সবকিছুই মাটিতে মিশে যায়, ভুতে রূপান্তরিত হয় না। আমাদের শরীরে আত্মা নামের আলাদা কোন শক্তি নেই যা আমাদের মৃত্যুর পর বেরিয়ে গিয়ে ভুতে রূপান্তরিত হয়।

আর আমরা সবাই মোটেও ভূত না, ভুতের অস্তিত্বই নেই।

[https://blogs.scientificamerican.com/observations/what-is-death-exactly/](https://blogs.scientificamerican.com/observations/what-is-death-exactly/)

৪. সদ্গুরু বলেছেন, কর্মফল বা কর্মা তিন ধরনের, প্রারব্ধ কর্মা এর মধ্যে একটি, মানুষের শরীরের উপর অতীতের কাজকর্মের বর্তমান ফলাফলকে প্রারব্ধ কর্মা বলে। সধগুরুর মতে, কোন ব্যক্তি যখন তার অতীতের কর্মফল পুরোপুরি ভোগ না করে যেতে পারে, মৃত্যুর পরে সেই ব্যক্তি ভূত হয়ে বেড়াবে।

যার যত বেশি অসমাপ্ত কর্মফল থাকবে সে তত বেশি দিন ভূত হয়ে থাকবে। জীবিত থাকতে ব্যক্তি যে ধরনের হবে, মরার পরে তার ভূত ও একই ধরনের হবে।

সদ্গুরু ভূতকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে, যে ভূতের আসলে কোন চেতনা নেই, তবে প্রবণতা (Tendency)আছে। এই ভূতেরা বা অশরীরিরা সকল কাজ মূলত এই প্রবণতার মাধ্যমে করে। উনার মতে, ভূত ইচ্ছে করে আমাদের কোনো ক্ষতি করে না, তাদের কোন ইচ্ছে অনিচ্ছে নেই, তারা শুধু প্রবণতা দ্বারা পরিচালিত হয়।

তারপরে ভদ্রলোক, ভূতেদের বিভিন্ন ধরন, কেন কিভাবে কোথা থেকে সব বিস্তর বর্ণনা করেছেন।

বলেছেন, প্লানচেট বিভিন্ন উপায়ে ভূতেদের ডাকা হয় সেসব ভূতেরা মূলত দেহ খুঁজে বেড়াচ্ছে, এজন্যই আমাদের ডাকে এত দ্রুত সাড়া দিয়ে চলে ‌ আসে। কিন্তু আমরা অত বিস্তারিত বর্ণনায় যাব না, কারণ বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সেসব নেহায়েৎ গাল গল্প।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : তিনি নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে মনগড়া কথা বলেছেন। বিসিবিতে ধর্মীয় আলাপ নিষিদ্ধ থাকায় এ নিয়ে আলাপ এগোনোর উচিত হবে না। জীব মৃত্যুর সাথে সাথে চেতনাহীন হয়ে যায়, তার না থাকে কোন ইচ্ছা, না থাকে কোন প্রবণতা, না থাকা কোনো জৈবিক অস্তিত্ব। মৃত্যুর সাথে জীব জড়ে পরিণত হয়।

আবারো বলছি, আমাদের দেহে আত্মা নামক আলাদা কোনো বস্তুর অস্তিত্ব নেই যা মৃত্যুর পরে বিভিন্ন ধরনের ভুতে রূপান্তরিত হবে। মৃত্যু মানে জীবের খেলা শেষ, তার মধ্য সকল জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে।

কর্মা বা কর্মফল বৈজ্ঞানিক ব্যাপার-স্যাপার নয়, ধর্মীয় ব্যাপার-স্যাপার,তাই এ নিয়ে আলাপ বন্ধ। যদিও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কর্মফল বলতে এমন কিছু নেই।

“Karma: What It Is and How It Affects Your Life” [https://www.webmd.com/balance/what-is-karma](https://www.webmd.com/balance/what-is-karma)

৫. উনি অশরীরি এবং জীব সবাইকে একটি শক্তি রূপে দেখেছেন। কাউকে যখন ভূতে ধরে তখন মূলত একটি শক্তির সাথে আরেকটি শক্তির ক্রিয়া ঘটে!

যে ব্যক্তির সাথে কোনো অশরীরীর রক্তের গ্রুপ এবং কর্ম মিলে যায় তার দেহের সাথেই নাকি এই অশরীরী শক্তি ক্রিয়া করে!

মহাশয় একটা নতুন টার্মের প্রবর্তন করেছেন, জেনেটিক মেমোরি নামে। ভূতেরা নাকি চারপাশে তাদের জেনেটিক মেমোরি খুঁজে বেড়ায়।

এমন আরো কত কি কথা বার্তা!

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : উদ্ভট কথাবার্তা। উনি যে ধরনের শক্তির কথা বলেছেন তার আদো অস্তিত্ব নেই। জীব দেহে শত শত রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে হাজারো রাসায়নিক বিক্রিয়া চলে, এই রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে জীব যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে। আমি এই মুহূর্তে যে এই ডিবাঙ্ক লিখছি আমার ব্রেইনেও এখন বিক্রিয়া চলছে!

জীব মারা গেছে মানে তার জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া বন্ধ, সে তখন জৈব সারে পরিণত হবে। ভূত হয়ে মানুষকে জ্বালাতন করার জন্য আশেপাশে ঘুরবে না।

ভূত দেখার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা :

[https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/2592980304118956/?mibextid=Nif5oz](https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/2592980304118956/?mibextid=Nif5oz) ভুত নিয়ে আরো বেশি জানতে ভূত এক্সপোজড বইটা পড়ে ফেলেন।

৬. এই আধ্যাত্মিক গুরুর মতে, মানুষের পুরো দেহ একটা শক্তি, আপনি যা পড়েন যা ব্যবহার করেন সবকিছুতেই আপনার এই শক্তি লেগে যায়। আপনি যদি মরে ভূত হয়ে যান, তখন কেউ যদি আপনার সেই জিনিস গুলো ব্যবহার করে তাহলে আপনার ভূত সেই ব্যক্তির ঘাড়ে চাপবে। ভুলেও বুড়ো আঙ্গুলে আংটি পড়বেন না কিন্তু, তাহলে আপনাকে বেশি বেশি ভূতে ধরবে! সাবধান!

আপনি কখনো শুনেছেন যে সাপ মরে ভূত হয়? সৎ গুরুর মতে, কোবরা সাপের ভূত হয় এবং তিনি নিজে কয়েকবার তা প্রত্যক্ষ করেছেন।

উনার বর্ণনা অনুযায়ী, কোবরা সাপের ভূত কাউকে ভর করলে সেই ব্যক্তির ত্বকে রেশ সৃষ্টি হবে। তবে পজিটিভ কোবরা সাপের ভূতে ধরলে লাভবানও হতে পারেন ।

সদ্গুরু কে যখন কোবরা সাপের ভূতে কামড়ে ছিল তখন ওনার কামড়ের স্থানে টিউমার সৃষ্টি হয়েছিল এবং শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছিল, এমনকি উনার লিভার কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রায়!

পরবর্তীতে নাকি অন্য এক কোবরা ভূতের সাহায্যে তিনি মুক্তি পেয়েছন!

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : মানুষের দেহ এমন কোন শক্তি না, যা ব্যবহৃত জিনিসে লেগে থাকবে। বাকি রইল মরার পরে ভূত হয়ে সেই ব্যবহৃত জিনিসের সন্ধানে আসা, এটা নেহায়েতই রূপকথার গল্প। যেখানে ভূত বা আত্মার অস্তিত্বই নেই, সেখানে ফিরে আসার গল্প নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়।

বুড়ো আঙ্গুলে আংটি পড়লে আসলেই ভুতে ধরে কিনা এটা আপনি নিজেও চেষ্টা করে দেখতে পারেন। তবে ধরবে না এটা নিশ্চিত থাকেন, ভূত থাকলেই না ধরবে।

কোবরা সাপের ভূতের কপালে পড়ে ওনার যে অবস্থার বর্ণনা উনি দিয়েছেন নিতান্তই গল্প মনে হয়েছে, উনার মেডিকেল রিপোর্ট দেখে বোঝা যেত আসলেই ওনার কি হয়েছিল। কারণ ওনার বর্ণনার মতো এরকম কিছু হওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অসম্ভব। ভক্তদের কাছে হিরো সাজার জন্য এরকম গল্প বানানই যেতে পারে! ওনার মেডিকেল রিপোর্ট বা এমন কিছু ই বইয়ে সংযুক্ত নেই।

৭. ভূতেদের বা অশরীরিদের তান্ত্রিকরা বন্দী করতে পারেন। বন্দী করে তাতে দিয়ে যা খুশি তাই কাজ করিয়ে নিতে পারেন।

মানুষের মন ও শরীরের বিভিন্ন অবস্থা উল্লেখ্য করে তিনি বলেছেন, মানসিক দেহ এবং শারীরিক দেহ দুটিই কিছু নির্দিষ্ট পয়েন্ট দ্বারা পরিচালিত হয়। যাদের চক্র বলে। এই চক্রের মাধ্যমে মানুষের মৃত্যু ঘটানো সম্ভব এবং ভূতেদের ধ্বংস করে দেওয়া বা মানুষের রূপ দেওয়া সম্ভব।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : না, ভুত আত্মা অশরীরী কিছুরই অস্তিত্ব নেই। তাদের বন্দি করার নামে যে ব্ল্যাক ম্যাজিক দেখানো হয় তা নিতান্তই ভন্ডামো। বিশ্বজুড়ে ব্লাক ম্যাজিক প্রমাণিত করতে পারলে লক্ষ টাকা পুরস্কার পাবে এমন ঘোষণা বেশ কয়েকটি আছে, আমাদের বিসিবি থেকেও ঘোষণা আছে।

“[https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S187705091400828X/pdf?md5=6a894a9e90b2840ad607e7fa21ce5af7&pid=1-s2.0-S187705091400828X-main.pdf](https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S187705091400828X/pdf?md5=6a894a9e90b2840ad607e7fa21ce5af7&pid=1-s2.0-S187705091400828X-main.pdf)” [https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S187705091400828X/pdf?md5=6a894a9e90b2840ad607e7fa21ce5af7&pid=1-s2.0-S187705091400828X-main.pdf](https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S187705091400828X/pdf?md5=6a894a9e90b2840ad607e7fa21ce5af7&pid=1-s2.0-S187705091400828X-main.pdf)

না, মানুষের দেহে এরকম চক্র-ফক্র কিছু নেই।পড়েন এটা,

[https://www.medicalnewstoday.com/articles/what-are-chakras-concept-origins-and-effect-on-health](https://www.medicalnewstoday.com/articles/what-are-chakras-concept-origins-and-effect-on-health)

৮. উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে আমেরিকার Tennessee এলাকা থেকে মোট পাঁচটি উপজাতিকে জোর করে উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ করার সময় উপজাতি মানুষদের কাছে না ছিল খাদ্য না ছিল অস্ত্র। তাই নতুন গন্তব্যে যেতে যেতে তাদের অধিকাংশই মারা পড়েছিল।

তো সদ্গুরু যখন টেনেসি অঞ্চলের অ্যাপালেচিয়ান‌ পর্বতমালায় গিয়েছিলেন তখন সেখানে একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। তিনি একটি মানুষের আত্মা দেখতে পান যা প্রায় ২০০-৩০০ বছর ধরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তার মুখে হতাশা আর লজ্জার ছাপ। মূলত এই আত্মাটি যার ছিল, সে একজন শ্বেতাঙ্গ সৈনিক দ্বারা খুন হয়েছিল। সে তার পুরো জাতিকে রক্ষা করার চেষ্টা করছিল।

আত্মাটিকে এভাবে বহু বছর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সদ গুরুর মনে তাকে মুক্ত করার আশঙ্কা জেগে ওঠে এবং অনেক চেষ্টা করে মুক্ত করেছিলেন ও।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : ইতিহাসের অংশটুকু ঠিক আছে। কিন্তু দুই তিন শো বছর আগের আত্মা মুক্তির যে কাহিনী তিনি শোনালেন, মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। বিজ্ঞানের যেখানে আত্মার অস্তিত্ব নেই সেখানে মুক্তির প্রশ্নই উঠে না।এসব ভুয়া এবং মনগড়া।

৯. রাতের বেলা সদ্গুরুর বাসার করিডোরে এক সুন্দরী প্রেতাত্মা ঘুরে বেড়াত, তিনি প্রায়ই তার নুপুরের শব্দ পেতেন। শুধু তিনি নন, বছরের বাচ্চা মেয়ে সহ পরিবারের অন্যান্যরাও শুনেছেন। কিন্তু এই প্রেতাত্মা ছিল ভালো, সে কখনো ক্ষতি করার চেষ্টা করেনি।

প্রায় দুই বছর ধরে গুরুর বাসায় এই সুন্দরী প্রেতাত্মার উপদ্রব থাকলেও সে কখনোই বাসার মধ্য প্রবেশ করেনি। তবুও সৎ গুরু নিজের মেয়ে নিরাপত্তার খাতিরে বিভিন্ন তন্ত্র মন্ত্র পড়ে রেখেছিলেন।

দু বছর পরে, ওনার শরীর যখন কোবরা সাপের ভূতের কবল থেকে সেরে উঠেছে তখন তিনি প্রেতাত্মাটিকে বিলীন করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সফলও হন।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : হয়তো বানোয়াট গল্প। নয়তো ওনার হ্যালুসিনেশন হয়েছে। পরিবারের সবার মিলেও হতে পারে। বাস্তবের শব্দ হচ্ছে না কিন্তু আপনি শুনতে পাচ্ছেন এরকম ঘটনাকে অডিটরি হ্যালুসিনেশন বলে।

যখন অনেক বেশি একসাথে বাস্তবে নেই এরকম কিছু দেখতে পায় কিংবা শুনতে পায় তখন তাকে ম্যাস হ্যালুসিনেশন বলে।

হ্যালুসিনেশন নিয়ে পড়তে পারেন :

[https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/3319218164828496/?mibextid=Nif5oz](https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/3319218164828496/?mibextid=Nif5oz)

১০. অনেক অশরীরী আবার মানুষ হয়ে জন্মাতে চায়, তাই তারা গর্ভবতী মহিলার গর্ভে ঢুকে পড়ে। ( পৃষ্ঠা ২৫৬) তারা আকারে বাচ্চাদের সাইজ নেয় কারণ না হলে মায়ের গর্ভে তাদের জায়গায় সংকুলান হবে না। বাচ্চা হিসেবে জন্ম নিয়ে তারা নতুন জীবন শুরু করে।

সদ্গুরু হিসাব মতে, যদি সারা পৃথিবীর সব মহিলারা এক বছরের জন্য গর্ভধারণের বিরতি দেয় তাহলে পুরো বিশ্বে 130 মিলিয়ন অশরীরী নতুনরূপে জন্ম নিতে পারবে না।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : উনি এসব কথাবার্তা ও হিসাব কোথায় পেয়েছেন নিজেই ভালো জানেন। রূপকথার গল্প এবং পৌরাণিক কাহিনী থেকেই নেওয়া এসব। এসবের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজতে যাওয়া একপ্রকার বোকামি যদিও।

মায়ের গর্ভে মানব শিশু জাইগোট থেকে ধীরে ধীরে গঠিত হতে থাকে, একপর্যায়ে তার হৃদ স্পন্দন শুরু হয়, ব্রেইনে নিউরনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ৮ থেকে ১০ মাসে পূর্ণাঙ্গ মানব শিশুকে রূপান্তরিত হয়। তার মধ্য আলাদা করে কোনো আত্মা প্রবেশ করানো লাগে না।

১০ . নির্মানক্য : নির্মানক্য হচ্ছে কিছু যোগী যারা অনেক আগে পৃথিবীতে বাস করত কিন্তু এখনো মাঝে মধ্যে তারা দেখা দেয়। তারা চাইলেই নিজেকে দৃশ্যবান করতে পারে আবার অদৃশ্য করতে পারে। তাদের আসলে দুটো দেহ : স্থূল দেহ( Physical body) ও অস্থুল দেহ ( Subtle body)। স্থুল দেহ মারা গেলেও অস্থুল দেহ টিকে থাকে এবং তারা মরে গিয়েও মাঝেমধ্যে এই অস্থায়ী এবং অস্থায়ী দেহে ফিরে আসে, এই দেহকে চাইলে ইচ্ছেমতো দৃশ্যত বা অদৃশ্য করা যায়। আপনি তাদের চোখের সামনে দেখবেন ঠিকই, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে তাদের প্রকৃত দেহ নেই।

উনি আরেকটা তথ্য দিয়েছেন, আমাদের মোট শক্তির ২০ পার্সেন্ট নাকি আমাদের শারীরিক কাজে ব্যয় হয়।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : মানুষের দেহ একটাই হয়। স্থূল এবং অস্থূল বলে মানুষের দেহের প্রকারভেদ হয় না।

মানুষ মারা যাওয়া মানে চেতনা শূন্য হয়ে যাওয়া। শরীর পঁচে মাটিতে মিশে যাওয়া। তার আত্মা বা অস্থুল দেহ বলতে কিছু থাকে না যা পরবর্তীতে আবার দৃশ্যমান হবে, ইচ্ছে হলে অদৃশ্য হবে।

এসব সম্পূর্ণ বানোয়াট কথাবার্তা।

আমাদের মোট শক্তির প্রায় পুরো অংশই শারীরিক কাজে ব্যবহৃত হয়, আপনি যতই মানসিক পরিশ্রম করেন না কেন তাতে খুব বেশি ক্যালরি খরচ হয় না।

পড়েন এটা,

[https://www.healthline.com/health/does-thinking-burn-calories](https://www.healthline.com/health/does-thinking-burn-calories)

১১. আত্মা নামানো।

বিভিন্ন সাধু বা তান্ত্রিকরা সাধনা করে আত্মা নামাতে পারেন। কোনো একটি মৃতদেহ যেটাই আত্মা নেই, সেটাই নতুন করে আত্মা আনতে পারেন। তবে সদগুরুর মতে এই কাজ অনেক কঠিন, সবাই পারেনা। এর জন্য প্রচুর সাধনা করতে হয়।

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : কয়েকবার বলা হয়েছে আত্মা বলতে কিছু নেই। তবুও প্ল্যানসেট বা অন্যান্য মা কিভাবে আত্মার নামানোর নাটক করা হয় তা জানতে পড়ুন :

[https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/3126653907418257/?mibextid=Nif5oz](https://m.facebook.com/groups/bcb.science/permalink/3126653907418257/?mibextid=Nif5oz)

 

(লেখা এডিট করে সহায়তার জন্য ইমামুল হাসান দাদার কাছে আমি কৃতজ্ঞ)

লিখেছেন সেলিম খান

ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান